ঢাকা, ডিসেম্বর ৬, ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১:১৯ am

মহাজাগতিক পথচলা চিকো মেন্ডিসের স্বপ্ন : আমাজন কী থাকবে ঘনীভূত লোভের লোলাজিহ্বা

| ২৪ আশ্বিন ১৪২৬ | Wednesday, October 9, 2019

নতুন করে পুড়েছে বা পোড়ানো হয়েছে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’খ্যাত বন আমাজন
নতুন করে পুড়েছে বা পোড়ানো হয়েছে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’খ্যাত বন আমাজন। প্রত্যেক বছরই পোড়ে তবে এবার অনেক বেশি পুড়েছে। দ্য ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্চ (আইএনপিই) বলছে, আগের তুলনায় ৮৫ শতাংশ। সরকারি হিসাব বলছে, এ বছরের প্রথম আট মাসে ব্রাজিলের জঙ্গলে ৭৫ হাজারের বেশি দাবানল হয়েছে। যা আগের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। পুরো ২০১৮ সালের প্রায় দ্বিগুণ। ১৯৭০ সালে প্রথমবার পোড়ানো হয়েছিল রাস্তা বানানোর জন্য তখনো অনেক পুড়েছিল। অনেকেই মনে করছেন এর পেছনে সুদূর বাণিজ্যিক পরিকল্পনা থাকতে পারে।

এ ব্যাপারে একটা অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ছে। ১৯৯৯ সাল। এপ্রিলের কোনো একদিন। আমি আর দ্বিজেন দা (বলছি প্রয়াত প্রকৃতিবিদ দ্বিজেন শর্মার কথা), সঙ্গে আছেন স্থানীয় বাসিন্দা শরফুদ্দিন সাহেব। আমরা যাচ্ছি শিমুলিয়া থেকে মাধবকু- জলপ্রপাত ও পাথারিয়ার পাহাড়ের নৈসর্গিক সৌন্দর্য দর্শনে। দ্বিজেন শর্মার গ্রাম শিমুলিয়া অর্থাৎ বড়লেখা থানার কাঁঠালতলী থেকে আট কিলোমিটারের পথ। তবে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া জংশন থেকে ৩২ কিলোমিটার।

দুপার্শ্বে টিলা, গাছপালার সারি। ক্রমেই তা ঘন হয়ে উঠেছে। কখনো পাখির ডাক, কখনো ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক শোনা যাচ্ছে। মাঝে মাঝে টিলার ওপর মানুষজন ঘরবাড়ি উঠিয়ে বসতি গড়ে তুলেছে। প্রচ- রোদে পাহাড়ি অঞ্চল ধোঁয়াশাচ্ছন্ন। দূরে পাথারিয়া পাহাড় দেখা যাচ্ছে। মাঝে মাঝে খাসিয়াপঞ্জির ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষরা আঁকাবাঁকা পথ ধরে কোথায় যেন চলেছে। শরফুদ্দিন সাহেবের কাছে জানা গেল এ স্থানটা আরও ঘন ছিল, ঢোকাও সহজসাধ্য ছিল না, রয়েল বেঙ্গল টাইগারও ছিল; আসামের জঙ্গলের থেকে আসত পাথারিয়া পাহাড়ে হাতি, গ-ার ও বন্য মহিষের দল, এখানে তাদের আড্ডা ছিল। তবে যেভাবে চারদিকে গাছ ও বনজঙ্গল নিধনের আয়োজন ও বাস্তবায়ন দেখলাম তাতে কয়েকদিন পরে মশামাছি ছাড়া কিছুই থাকবে না, বন একেবারে পাতলা হয়ে গেছে। টিলা কেটে একের পর এক বাড়ি ওঠাচ্ছে তাতে আমাদের সমতলভূমির খোলা ডাঙা বা ধানী জমিতে ঘর উঠানোর মতোই মারাত্মক। টিলাময় চা বাগানের ভেতর ও পাশ দিয়ে মাধবকু-ে যেতে যেতে অনাগত সেসব ভয়াবহ দিনের গল্পই হচ্ছিল।

জেলা পরিষদের রেস্ট হাউসের সামনে। পাশেই সরকার পর্যটন হোটেল বানাচ্ছে। রোদের ঝিকিমিকিতে স্বপ্নময় মনে হলেও জায়গাটা অসংখ্য মানুষের আনাগোনায় নোংরা হয়ে পড়েছে। তার পরও চারদিকে কি শূন্যতা বিরাজ করছে; প্রকৃতির নানারকম শব্দ মুখরিত করে তুলছিল চারপাশটা; আমি উচ্ছ্বসিত প্রশংসায় বিভোর ছিলাম তখন দ্বিজেন শর্মা বললেন, এসব হিউম্যান অ্যাক্টিভিটিসের ফলে ঝরনা শুকিয়ে যাবে, সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে, ম্যানকাইন্ড হলো জিওলজিক্যাল ফোর্স। শুরু করলেন বন ধ্বংসের এক গল্প :

স্থানীয় লোকদের ব্যবহার করে বন পুড়িয়ে দেওয়া হয়, তার পর ওখানে প্রচুর ঘাস জন্মে ও গবাদিপশুর চারণভূমিতে রূপান্তরিত হয় এবং পশুপালনে মানুষদের উদ্বুদ্ধ করা হয়। গজিয়ে ওঠে নানা ধরনের পশুপালনের খামার। যেহেতু ওই জমির উর্বরতা ছিল না, ফলে কিছুদিনের মধ্যে গবাদিপশুর বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায় ঘাসের অভাবে এবং এক সময় এগুলোকে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয় পশুপালকরা। এভাবে ম্যাকডোনাল্ডের মতো কোম্পানিগুলো তাদের মাংসের চাহিদা মিটিয়েছিল বিশ্বব্যাপী। এটা যদিও হঠাৎ ঘটে যাওয়া ঘটনার মতো মনে হলেও এটার মধ্যে সুনিয়ন্ত্রিত পরিকল্পনা ছিল বলে পরে জানা গিয়েছিল। তার পর যখন এক উৎস শেষ হয়ে যায় তখন সেখান থেকে কোম্পানি আরেকটি উৎসস্থলে ছুটে যায়। এটা ব্রাজিলের আমাজন বন ধ্বংসেরই গল্প ছিল।

দ্বিজেন দা মাধবকু-ের বিপন্ন অবস্থাকে বর্ণনা করার জন্য তখনই পৃথিবীর গভীরতর অসুখে প্রবন্ধে চিকো মেন্ডিসের কথা উল্লেখ করেছিলেন। ১৯৯৪ সালে মম দুঃখের সাধনে তা প্রকাশিত হয়। ২০১২ সালে বিজ্ঞান লেখক পান্থ রহমান রেজা একজন চিকো মেন্ডিসের অপেক্ষায় শিরোনামে চিকো মেন্ডিসের কথা অসাধারণভাবে তুলে ধরেন সায়েন্স জার্নাল ‘মহাবৃত্ত’-এ। এ কাহিনিগুলো থেকেই বোঝা যায়, আমাজনকে রক্ষা করতেই যেন চিকো মেন্ডিসের জন্ম হয়েছিল।

আমাজন ধ্বংসের বন পোড়ানো নতুন কিছু নয়, পৃথিবীর তথাকথিত উন্নয়ন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত। ১৯৭০ সালে সরকার ৫ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ ট্রান্সআমাজনিয়ান সড়ক নির্মাণের ঘোষণা দিলে তা শুরু হয়। এই সড়ক নির্মাণের ফলে আমাজনের অনেক আদিবাসী উদ্বাস্তু হয়ে পড়ে। এ সময় সড়ক নির্মাণকল্পে বনভূমিতে আগুন দেওয়া হয়। আরও পরে, রিও ব্রানকো থেকে এক্সাপুরির সংযোগ সড়কটি তাদের জীবনে দুঃস্বপ্ন হয়ে আসে। কেননা তখন নির্দেশ আসে পেট্রল ঢেলে বনভূমি পুড়িয়ে দেওয়ার। বনভূমি নষ্ট হওয়ায় ভূমিক্ষয় দেখা দেয়। বাড়ে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ। ১৯৮০ সালে বিআর ৩৬৪ সড়কটি আরও ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়। বিশ্বব্যাংক, এডিবি তাদের পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতামত ছাড়াই বিপুল অঙ্কের টাকা দেয়। এতে করে ইন্ডিয়ানদের অবলুপ্তি ঘটে, বনভূমি লোপ পায়, অনেক প্রজাতি হুমকির মুখে পড়ে, ভূমি ক্ষয় হয়। এ বিষয়গুলো নিয়ে ব্রিটিশ চলচ্চিত্র পরিচালক আদ্রিয়ান কোওয়েল আমাজনের ওপর ‘ডিকেড অব ডিস্ট্রাকশন’ নামে একটা তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। যাতে লেখা হয়ে আছে সেদিনের দুঃস্বপ্ন। আর চিকো মেন্ডিসের ঘুরে বেড়ানোর গল্প।

চিকো মেন্ডিস বলেছিলেন, ‘আমি ফুল চাই না। কেননা আমি জানি ফুলটি আপনি বন থেকে ছিঁড়ে এনে দেবেন’
চিকো মেন্ডিস (১৫ ডিসেম্বর ১৯৪৪-২২ ডিসেম্বর, ১৯৮৮) ছিলেন একজন ব্রাজিলীয় রাবার সংগ্রহকারী, ট্রেড ইউনিয়নের নেতা এবং পরিবেশবাদী। তার পুরো নাম ফ্রান্সিসকো আলভেস মেন্ডেস ফিলহো। তিনি আমাজন চিরহরিৎ বন সংরক্ষণের জন্য লড়াই করেছিলেন এবং ব্রাজিলীয় কৃষক ও আদিবাসীদের পক্ষে ছিলেন। ছেলেবেলায় জেনে গিয়েছিলেন মানুষ ও তার চারপাশটা মিলেই হচ্ছে প্রকৃতি। একে অন্যকে সহযোগিতা করেই গড়ে ওঠে জীববৈচিত্র্য। তাই তো প্রকৃতিমাতা জীববৈচিত্র্যকে বাঁচিয়ে রাখতে আজীবন কাজ করেছেন, জেল খেটেছেন তিনি। সরকার ও ভূস্বামী উভয়ের হাতে মার খেয়েছেন। ১৯৮৮ সালের ২ ডিসেম্বর তাকে একজন রানার হত্যা করে। এ রকমটি ঘটেছিল আমাদের চলেশ রিছিল, পীরেন স্নাল, আলফ্রেড সরেনদের ক্ষেত্রে; প্রথম দুজন মধুপুরের ইকোপার্ক নির্মাণের বিরোধিতা করে; আরেকজন নওগাঁর বনে, নিজেদের বাড়িঘর থেকে উদ্বাস্তু হওয়া ঠেকাতে।

চিকো মেন্ডিস বলেছিলেন, ‘আমি ফুল চাই না। কেননা আমি জানি ফুলটি আপনি বন থেকে ছিঁড়ে এনে দেবেন।’ গাছের প্রতি, পরিবেশের প্রতি এমন ভালোবাসা ছিল চিকো মেন্ডিসের। তাকে বলা হয় বৈচিত্র্যপূর্ণ প্রাণের কোলাহলে মুখরিত পৃথিবীর প্রথম সারির সেনাপতি। তার সম্মানেই ব্রাজিলীয় পরিবেশ মন্ত্রকের আওতাধীন একটি সংস্থা চিকো মেন্ডিস ইনস্টিটিউট ফর কনজার্ভেশন অব বায়োডাইভার্স নামকরণটি করা হয়েছে। ১৯৮৭ সালে জাতিসংঘের এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম গ্লোবাল ৫০০ রোল অনার এবং ১৯৮৮ সালে ন্যাশনাল ওয়াইল্ড লাইফ ফেডারেশনের জাতীয় সংরক্ষণ প্রাপ্তি পুরস্কারসহ মেন্ডিস তার কাজের জন্য বেশ কয়েকটি পদক পেয়েছিলেন।

চিকোর জন্ম একরি রাজ্যের ছোট্ট শহর ঝাপুরির বাইরে সেরিংল বোম ফুটুরো নামে একটি রাবার রিজার্ভে। তিনি ছিলেন দ্বিতীয় প্রজন্মের রাবার সংগ্রহকারী, ফ্রান্সিসকো মেন্ডিস এবং তার স্ত্রী ইরাকের ছেলে। চিকোরা ছিলেন ১৭ ভাইবোন, যাদের মাত্র ছয়জন শৈশব থেকে বেঁচেছিলেন। ৯ বছর বয়সে চিকো তার বাবার পাশাপাশি রাবার সংগ্রহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। সেই সময় দেশজুড়ে রাবারশিল্প হ্রাস পাচ্ছিল এবং গবাদিপশুর চারণভূমির জন্য প্রায়ই জমি বিক্রি ও পোড়ানো হতো। সরকার ও গবাদিপশু পালকরা তাদের সাপুপুরীর নিকটবর্তী অঞ্চলসহ ভূমি থেকে অনেক সেরিংগুয়েরোসকে বহিষ্কার করেছিল। এ পরিস্থিতিতে রাবার সংগ্রহকারীদের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায় এবং চিকোর পরিবার অন্য পরিবারগুলোর মতোই মারাত্মকভাবে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে।

চিকো মেন্ডিসের রাবার শ্রমিক ইউনিয়ন রেইন ফরেস্টকে বাঁচাতে সরকারকে সংরক্ষিত বনভূমি স্থাপন করতে বলেছিল। তারা চেয়েছিল, বনটিকে যেন ক্ষতিগ্রস্ত না করে মানুষ ব্যবহার করতে পারে। তারা খুব কার্যকর কৌশলও উদ্ভাবন করেছিল, এগুলোকে তারা ‘এমপেট’ বলে ডাকে। উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালে ব্রাসিলিয়া শহরে রাবার টেপার্স ইউনিয়ন গঠন করা হয়। ১৯৮৫ সালে রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় নতুন এই ইউনিয়নের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সারা দেশ থেকে রাবার সংগ্রহকারীরা এসেছিল। তাদের জীবিকা নির্বাহের ঝুঁকি থেকে শুরু করে রাস্তা বেঁধে দেওয়া, গবাদি পশুপালনের কাজ এবং বন উজাড়ের বৃহৎ সমস্যাগুলোর দিকে সবার মনোযোগ নিবদ্ধ হয়েছিল।

মেন্ডিস বিশ্বাস করতেন যে, শুধু রাবার সংগ্রহের ওপর নির্ভর করাটা টেকসই হবে না; সেরিংগিওরদের উন্নয়নে প্রয়োজন আরও সামগ্রিক, সমবায় ব্যবস্থার বিকাশ, যে পদ্ধতিগুলো বিভিন্ন জাতের বনজ যেমন বাদাম, ফল তেল এবং তন্তু নিয়ে কাজ করে। এ ছাড়া রাবার সংগ্রহকারীদের শিশুদের জন্য মানসম্মত শিক্ষার সঙ্গে শক্তিশালী সম্প্রদায় গঠনে মনোনিবেশ করা প্রয়োজন। ১৯৮৭-এর মার্চে পরিবেশ প্রতিরক্ষা তহবিল এবং ন্যাশনাল ওয়াইল্ডলাইফ ফেডারেশন মেন্ডিসকে ওয়াশিংটন ডিসিতে নিয়ে এসেছিলেন। কারণ ছিল ইন্টার-আমেরিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, বিশ্বব্যাংক এবং মার্কিন কংগ্রেসকে নিষ্ক্রিয় রিজার্ভ তৈরি করা যে প্রয়োজন তা কর্তৃপক্ষকে শুধু মেন্ডেসই বোঝাতে পারে। চিকো মেন্ডিস বলেছিলেন, প্রথমে আমি ভেবেছিলাম আমি রাবার গাছ বাঁচাতে লড়াই করছি, তখন আমি ভেবেছিলাম আমি অ্যামাজন রেইন ফরেস্টকে বাঁচানোর জন্য সংগ্রাম করছি। এখন বুঝতে পারছি আমি মানবতার জন্য সংগ্রাম করছি।

মেন্ডেস কেবল পরিকল্পিত বন উজাড় বন্ধে এবং সংরক্ষণে সক্ষম হননি; রাস্তা বানানো শুরু করার পর থেকেই অনেক আদিবাসী উদ্বাস্তু হওয়ার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য দাঁড়িয়েছিলেন, ইন্ডিয়ানদের অবলুপ্তি ঘটার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন; অনেক প্রজাতি হুমকির মুখে পড়ার, ভূমিক্ষয় হওয়ার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য চিকো মেন্ডিস দাঁড়িয়েছিলেন। তার পর একদিন গোধূলিবেলা ঘাতকের বুলেটের মুখে আমাজনের মতো উদাত্ত বুক পেতে দিয়েছেন চিকো মেন্ডিস।

সাময়িকভাবে বন্ধ করতে পারলেও চিকোর মৃত্যুর ৩০ বছরের মাথায় আবার পোড়ানো শুরু হয়েছে আমাজন। এদিকে ১৫ বছর পর আমি আবার মাধবকু-ে বেড়াতে এলে চকচকে কংক্রিটের জঙ্গল ছাড়া কিছু চোখে পড়েনি। প্রচুর রেস্টুরেন্ট, ওলটপালট ব্যবসায়িক পসরা; প্রচ- শব্দদূষণ। এভাবে প্রত্যেকটা জায়গার পরিবেশ পাল্টে যাচ্ছে অনিয়ন্ত্রিত উন্নয়নের জোয়ারে। দ্বিজেন শর্মা মাধবকু-ের বিপন্ন অবস্থাকে বর্ণনা করার জন্য তখনই পৃথিবীর গভীরতর অসুখে লিখেছিলেন, প্রকৃতির ওপর বলাৎকাররত কারা এই লম্পট? করাতকল ইটভাটার মালিকদের লোক? না, সরাসরি তারা কেউ নয়। এ হলো ঘনীভূত লোভের লোলজিহ্বা। আমি চিকো মেন্ডিস নই। এই জিহ্বা টেনে ধরার মতো সাহস আমার নেই। অসহায় আমি ঠায় দাঁড়িয়ে থাকি। খট খট আওয়াজ ক্রমে কফিনে পেরেক ঠোকার মতো ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। এ কার কফিন? সম্ভবত আমাদের সবার, গোটা মানবজাতির!

লেখক: আসিফ
বিজ্ঞান বক্তা ও লেখক; সম্পাদক, মহাবৃত্ত